ইউআইটিএস-এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বীরেন শিকদার
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)- এর বার্ষিক সাংস্কৃতিক সপ্তাহের পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে ৭ ডিসেম্বর ২০১৬ তারিখ বুধবার সকাল ১১:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বারিধারাস্থ ক্যাম্পাস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ড. শ্রী বীরেন শিকদার বলেন, ইউআইটিএস এর এই সাংস্কৃতিক সপ্তাহ একটি ব্যতিক্রমী আয়োজন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে ইউআইটিএস জাতিকে একটি মূল্যবান বার্তা দিতে চায় বলে তাঁর কাছে মনে হয়েছে।
উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গঠন করাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য বলে তিনি জানান। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রাক্কালে এদেশর যে পরিস্থিতি ছিল তার বর্ণনা দিয়ে বলেন, এক হাজার বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীন জাতিসত্বার উন্মেষ ঘটে।
জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের নৃতাত্বিক ঐক্যের অভাব দুর হয়েছিল তাঁর ভাষাগত ঐক্যভিত্তিক জাতিস্বত্তা বিনির্মানের মাধ্যমে। এরই ভিত্তিতে ভাষা আন্দোলন, ছয়দফা আন্দোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়।
সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের প্রকৃতিতে কখনোই এ অপশক্তিগুলো মাথাচারা দিয়ে উঠতে পারবে না। প্রকৃতিগতভাবেই বাঙ্গালী শান্তিপ্রিয় এবং ধর্ম নিরপেক্ষ। তাই কোন অবস্থাতেই বাংলাদেশে এ সকল অপতৎপরতা ঠাঁই পাবে না। তিনি জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বর্তমান সরকারের “জিরো টলারেন্স” নীতির উল্লেখ করেন। তিনি হাজার বছরের বাঙ্গালী সংস্কৃতির সফল রূপকারদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন বর্তমান সরকারের ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্য অনেকখানি অর্জিত হয়েছে। উপস্থিত ছাত্রদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন যে, তাদেরই নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে পরিণত হবে।
বিশেষ অতিথি, পিএইচপি ফ্যামিলির মানব সম্পদ ও প্রশাসনের নির্বাহী পরিচালক জনাব আহমদ সিপারউদ্দীন এবং ইউআইটিএস বোর্ড অব ট্রাস্টিজের উপদেষ্টা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান।
জনাব আহমদ সিপারউদ্দীন বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে শিক্ষার অতুলনীয় উন্নতি ঘটেছে। সকল স্তরের শিক্ষায় বাংলাদেশের অভ্যূদয়ের ইতহাস সংযোজন জাতির জন্য একটি মাইল ফলক। তিনি আরও বলেন, দেশের ছাত্র সমাজকে গড়তে উন্নত শিক্ষার পাশাপাশি প্রয়োজন উন্নত সংস্কৃতি চর্চা। তিনি বলেন, সংস্কৃতি বাদ দিলে মানুষের মনুষ্যত্ব থাকে না। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা স্বরণ করে তিনি বলেন, এ উপমহাদেশে আমরাই একমাত্র জাতি যারা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তাই আমরা কখনোই পরাজিত হব না। তিনি জাতির অগ্রগতির ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের ভূমিকার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, নেতৃত্ব তথা টিম বিল্ডিং এর ক্ষেত্রে সংস্কৃতি চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অধ্যাপক ড. কে এম সাইফুল ইসলাম খান প্রধান অতিথির প্রতি শতব্যস্ততার মধ্যে সময় বের করে আমাদের মাঝে উপস্থিত হবার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, মানুষকে পরাধীন রাখার জন্য উপাদানের কোন অভাব নেই। হিংসা, লোভ প্রভৃতি নেতিবাচক তাড়নার কাছে মানুষ প্রতিনিয়ত পরাধীন হচ্ছে। যাঁরা প্রকৃত জীবন কি বুঝতে পারেন তাঁরা এগুলো থেকে মুক্ত হয়ে মহামানবের জীবন যাপন করেন। মাদার তেরেসার কথা স্বরণ করে তিনি বলেন, শরীরের রোগের চেয়ে অনেক বেশী জটিল রোগ হচ্ছে মানুষের মনে ভালবাসার অভাবজনিত অসুস্থতা। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকেই সংস্কৃতি চর্চা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। বিজয়ের এ মাসে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশের জাতির পিতা এ দেশের স্বাধীনতার রূপকার।
শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।
Account Benefitঅনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। সভাপতি তার ভাষনে বলেন, সংস্কৃতি একটি জাতির জীবনের প্রতিচ্ছবি। সাধারণত একটি জাতি সাংস্কৃতিকভাবে যত উন্নত অর্থনৈতিকভাবেও সে জাতি তত উন্নত। বাঙালী হিসেবে আমরা কিন্তু এ ক্ষেত্রে ভিন্ন। আমরা অর্থনৈতিকভাবে তত উন্নত না হলেও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সর্বদা উন্নত ও অগ্রসর একটি জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচিত। তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের এক অন্যতম হাতিয়ার ছিল বাঙালীর হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতি। আমাদের ভাষা আন্দোলন ছিল মূলতঃ সাংস্কৃতিক আন্দোলন, আর এটা ছিলো বাঙালী জাতিসত্তার প্রকাশ। তাই ভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা প্রথমে স্বায়ত্ব শাসনের আন্দোলন এবং পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধকে এগিয়ে নিতে সক্ষম হই। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদকে তিনি আমাদের জাতীয় জীবনের প্রধান সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এ বিপথগামী শক্তিদ্বয়কে মোকাবেলা করতে হলে আমাদের প্রয়োজন সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নবজাগরণ। এর জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজন সাংস্কৃতিক চর্চ্চা। আমরা ইউআইটিএস-এ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা করার জন্য ব্যাপক সাংস্কৃতিক কার্যক্রম গ্রহণ করেছি। আজকের অনুষ্ঠান হচ্ছে তারই অংশ বিশেষ।
অনুষ্ঠান শেষে ইউআইটিএস-এর স্কুল অব বিজনেস এর ডীন ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আ.ন.ম. শরীফ উপস্থিত সকল আমন্ত্রিত অতিথিদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য শিক্ষাবিদ ও সমাজের বিভিন্ন স্তরের সম্মনিত ব্যক্তিবর্গ এবং ইউআইটিএস-এর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মোঃ কামরুল হাসান, সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা। আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণ শেষে ইউআইটিএস এর ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউআইটিএস-এর সহকারী অধ্যাপক খোরশেদ আলী ও প্রভাষক তানিয়া তাবাসসুম তনু।
মাসব্যাপী অনুষ্ঠিত ইউআইটিএস এর সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কর্মকান্ডে পুরস্কার প্রাপ্তরা হলেন- ফুটবল চ্যাম্পিয়ন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, রানার্স আপ সিএসই ও আইটি বিভাগ। বিতর্ক চ্যাম্পিয়ন আইন বিভাগ ও রানার্স আপ ইংরেজী বিভাগ। সংগীতে ১ম জান্নাতুল ইসলাম সজিব (ইইই), নৃত্যে মৌরিন মৌ (আইটি), চিত্রাংকনে ১ম আরিফুল ইসলাম অনিক (বিবিএ), আবৃত্তিতে ১ম মরিয়ম জামিলা (ইংরেজী), ফটোগ্রাফীতে ১ম মোঃ সাফায়েত ইসলাম এবং মোবাইল ফটোগ্রাফীতে শেখ ইমতিয়াজ আহমেদ রাফি সেরা ফটোগ্রাফী পুরস্কার অর্জন করেন।
More detail about
University of Information Technology and Sciences
- মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
- এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট কোর্স- ইংলিশ, চাইনিজ, আরবি, ফ্রেঞ্চ
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-বিজ্ঞপ্তি
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর
- খুবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২২ ডিসেম্বর
- জবির সমাবর্তন ১১ জানুয়ারি
- জবিতে শূন্য আসনে ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু ২০ ডিসেম্বর
- রাবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
- অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ১৩ জানুয়ারি; মাস্টার্স রিলিজ স্লিপ আবেদন শুরু ১৯ ডিসেম্বর
- ডিজিটাল মেলা-২০২০ উপলক্ষে টেলিকমিউনিকেশন দফতরের রচনা প্রতিযোগিতা
- ঢাকা পলিটেকনিকে জানুয়ারি-জুন’২০ সেশনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি শুরু
- জেএসসি-পিইসির ফল বছরের শেষ দিন
- ৪০তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা ৪-৮ জানুয়ারি
- তিতুমীর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের নিবন্ধন শেষ আজ
Submit Your Comments: