বৈধতার দাবিতে গমেক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন
বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ব্যয়বহুল পড়াশোনা করেও বৈধভাবে চিকিৎসাসেবা দিতে পারবেন না, পাবেন না বাংলাদেশ মেডিক্যাল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রেশন- এ শঙ্কায় গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের প্রায় তিনশ’ শিক্ষার্থী আন্দোলনে নেমেছেন।
গতকাল শনিবার (২০ জুলাই) গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার দাবিতে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ পরিচালনার নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) অনুচ্ছেদ ৭.১ অনুযায়ী– বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্স চালু রাখতে হলে অবশ্যই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হতে হবে। তবে, এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজ নিজেরাই কোর্স ও শিক্ষা কারিকুলাম চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৭ জুন ইউজিসি বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানায়, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এমবিবিএস, বিডিএসসহ আরও কয়েকটি কোর্স ‘বৈধ বলে বিবেচিত হবে না’। পরবর্তীতে, গত ২৪ জুন গণ বিশ্ববিদ্যালয় ইউজিসি’কে উকিল নোটিশ পাঠিয়ে জানায়, তাদের ওই বিজ্ঞপ্তি ভিত্তিহীন। কারণ, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের এ কোর্সগুরো চালু রাখার জন্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ আছে। ইউজিসি’কে এ নোটিশপ্রাপ্তির দুই দিনের মধ্যে আগের বিজ্ঞপ্তি ভুল ছিল মর্মে উপরোক্ত কোর্সগুলো অনুমোদিত বলে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের অনুরোধ জানায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়।
এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রথম দিন গমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ফরিদা আদিব খানম বলেন, শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি ট্রাস্টি বোর্ডকে জানানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে ট্রাস্টি বোর্ড ঢাবির অধিভুক্ত হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে ও সে নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। দ্রুত আমরা শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবি মেটাতে পারবো বলে আশা করি।
একদিকে আদালতের স্থগিতাদেশ নিয়ে কোর্স পরিচালনা, অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দেওয়া পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছে গমেক কর্তৃপক্ষ। মামলা চালানোর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের কেন এ আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে জিজ্ঞেস করলে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ বলেন, মামলার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাদের নিয়ে চোর-পুলিশ খেলছে গমেক কর্তৃপক্ষ। একদিকে শিক্ষার্থীদের বলছে, দ্রুত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে যাচ্ছে। অন্যদিকে, ইউজিসির আদেশের বিরুদ্ধে আদালতে রিট পিটিশন দায়ের করছে।
সূত্র জানায়, ১৯৯৫ সালের ১৬ নভেম্বর গণ বিশ্ববিদ্যালয় নামে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য তৎকালীন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নীতিমালা, ১৯৯২ (নম্বর ৩৪)-এর অধীনে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) কাছে আবেদন করা হয়। এর তিন দিন পর বিমক/সাঃ/২৯৩/৯৫-২২৪৩ নম্বর মেমো সংশ্লিষ্ট পত্র মারফত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেয় ইউজিসি।
শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।
Account Benefitএরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হলে ১৪/১৩ বেঃ বি-১/৯৫/১২৫ শিক্ষা মেমো নম্বর সংশ্লিষ্ট পত্র মারফতে অনুমোদন দেওয়া হয়। গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দেওয়ার সময় ইউজিসি স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুষদের অধীন এমবিবিএস, বিডিএস ও ফিজিওথেরাপি এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে বিবিএ ও পরিবেশ বিজ্ঞানের অনুমোদন দেওয়া হয়।
কিন্তু ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল ইউজিসি গণ বিশ্ববিদ্যালয়েরর এমবিবিএস, বিডিএস, ফিজিওথেরাপি, বিবিএ ও পরিবেশ বিজ্ঞান কোর্সের অনুমোদন নেই মর্মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এ বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৯ মে গণ বিশ্ববিদ্যালয় হাইকোর্টে একটি রিটি পিটিশন দায়ের করে। ওই রিটের ওপর ভিত্তি করে হাইকোর্ট ডিভিশন ইউজিসির দেওয়া নোটিশে স্থগিতাদেশ আরোপ করে। গত বছরের ২৬ নভেম্বর এ স্থগিতাদেশ ফের বর্ধিত করা হয় ও এ আদেশ ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে বলে জানানো হয়।
ঢাকা জেলার অন্তর্গত মেডিক্যাল কলেজগুলো এখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) অধিভুক্ত হয়ে পরিচালিত হচ্ছে। তাই সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গণস্বাস্থ্য মেডিক্যালের শিক্ষার্থীরা চান, যেন তারাও দ্রুত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হন।
গত ১০ জুলাই ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের কাছে কয়েকটি দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। দাবিগুলো হলো-
১. দেশের প্রচলিত আইন মেনে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করতে হবে।
২. মেডিক্যাল কলেজের জন্য আলাদা ভবনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. বিএমডিসি ও সমাজকল্যাণ অধিদফতরের সব নিয়ম মেনে অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তিকরণের কাজ কতদূর, তার তথ্য শিক্ষার্থীদের জানাতে হবে।
৫. শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা আবাসিক হলের ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. অভিজ্ঞ ও যোগ্যতা সম্পন্ন শিক্ষক দিয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়া বাইরের কাউকে ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
৮. যোগ্যতা সম্পন্ন চিকিৎসক সৃষ্টির লক্ষ্যে উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন যন্ত্রাংশ ব্যবহারে দক্ষ করে তোলার ব্যবস্থা করতে হবে।
৯. মেডিক্যাল কলেজের জন্য আলাদা লোগোর ব্যবস্থা করতে হবে।
১০. মেডিক্যাল কলেজের ওয়েবসাইট আরও উন্নত করতে হবে ও নিয়মিত হালনাগাদের ব্যবস্থা করতে হবে।
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিক্যাল কলেজের ২০তম ব্যাচের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করছি। যদি উপযুক্ত পদক্ষেপ দেখতে না পাই, তাহলে আমাদের আন্দোলন আরও জোরদার হবে। তবে, হাসপাতালের কোনো রোগীর চিকিৎসাসেবা যেন ব্যাহত না হয়, সেদিকে আমরা নজর রাখছি।
More detail about
Gono Bishwabidyalay
- মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
- এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট কোর্স- ইংলিশ, চাইনিজ, আরবি, ফ্রেঞ্চ
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-বিজ্ঞপ্তি
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর
- খুবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২২ ডিসেম্বর
- জবির সমাবর্তন ১১ জানুয়ারি
- জবিতে শূন্য আসনে ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু ২০ ডিসেম্বর
- রাবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
- অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ১৩ জানুয়ারি; মাস্টার্স রিলিজ স্লিপ আবেদন শুরু ১৯ ডিসেম্বর
- ডিজিটাল মেলা-২০২০ উপলক্ষে টেলিকমিউনিকেশন দফতরের রচনা প্রতিযোগিতা
- ঢাকা পলিটেকনিকে জানুয়ারি-জুন’২০ সেশনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি শুরু
- জেএসসি-পিইসির ফল বছরের শেষ দিন
- ৪০তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা ৪-৮ জানুয়ারি
- তিতুমীর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের নিবন্ধন শেষ আজ
Submit Your Comments: