কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন: প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে রাজপথের আন্দোলন স্থগিত

প্রতিকী ছবি

প্রধানমন্ত্রী আশ্বাসে রাজপথের আন্দোলন স্থগিত করেছে সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। গতকাল সোমবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীদের সংগঠন সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা। তবে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত সারাদেশের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

সোমবার রাজধানীর শাহবাগ মোড় ৬ ঘন্টা অবরোধের পর এ ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারীদের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতারা সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোটা বাতিলে শিগগির প্রজ্ঞাপন জারি হবে- এ আশ্বাসে রাজপথের আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। তবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে।

এ বিষয়ে কোটা পদ্ধতি সংস্কার আন্দোলনকারীদের প্লাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর গণমাধ্যমে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রতিনিধি দলের আশ্বাসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাজপথের আন্দোলন স্থগিত করেছে। তবে প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন অব্যাহত থাকবে।

সাংবাদিকরা প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো প্রতিনিধি দলে কারা ছিলেন জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান নুরুল হক।

নুরুল হক আরও বলেন, এ নিয়ে তিনবার আমরা সরকারকে সময় দিলাম। আমরা সরকারের কথায় আস্থা রেখে আন্দোলন স্থগিত করলাম। দেখা যাক সরকার আমাদের বিশ্বাসের কী প্রতিদান দেয়।

শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।

Account Benefitসংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অনির্দিষ্টকালের ছাত্র ধর্মঘট চলবে।

এর আগে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী গতকাল সকাল ১০টা থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলনকারীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের প্রধান ফটক বন্ধ করে দেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে হাজারো শিক্ষার্থী জমায়েত হন। বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল করে সেখানে আসেন। আন্দোলনকারীদের মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস কয়েকবার প্রদক্ষিণ করে দুপুর ১টার দিকে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান নেয়।

আন্দোলনকারীরা এ সময় 'আর নয় কালক্ষেপণ, এবার চাই প্রজ্ঞাপন', 'প্রজ্ঞাপনে টালবাহানা, চলবে না চলবে না', 'দাবি মোদের একটাই, প্রজ্ঞাপন প্রজ্ঞাপন', 'আমার ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিব না', 'লেগেছে লেগেছে, রক্তে আগুন লেগেছে' প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন। শাহবাগ ঘিরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন থাকলেও আন্দোলনকারীদের বাধা দেয়নি। শিক্ষার্থীদের অবস্থানে শাহবাগে যানবাহন যান চলাচল বন্ধ হলেও অ্যাম্বুলেন্স চলাচল ছিল স্বাভাবিক।

এদিকে, গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে কোটা নিয়ে এক অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর মেয়ে, আমি আলটিমেটামের কাছে মাথানত করি না। কোটা নিয়ে আমি তো আগেই সিদ্ধান্ত দিয়ে দিয়েছি। আমরাতো বলেছি, আমরা এটা করবো। কিন্তু এখনই এটা করতে হবে? এ জন্য তো সময় লাগবে। আমি তো বলেছি কোটা থাকবে না। এরপরও আলটিমেটাম, আন্দোলনের হুমকি দেয়া হচ্ছে। এটার তো কোনো যুক্তি নেই।
More detail about
Dhaka University