যবিপ্রবির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু একাডেমিক ভবনের সামনের মাঠে এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সমাবর্তনের সভাপতিত্ব করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য মোঃ আবদুল হামিদ। সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান। সমাবর্তনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন। এবারের সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. রবার্ট হিউবার।
এই প্রথম এশিয়া মহাদেশের বাইরের কোনো নোবেল বিজয়ী বিজ্ঞানী সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন।
বুধবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অদূরে আব্দুলপুরে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত হেলিপ্যাডে রাষ্ট্রপতি অবতরণ করেন। সেখানে তাকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে লালগালিচা সংবর্ধনা দেয়া হয়। পরে মোটর শোভাযাত্রা করে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন রাষ্ট্রপতি এবং তার সফরসঙ্গীরা।
সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি বলেন, আগামী প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে প্রস্তুত করতে এবং সকল স্তরে নেতৃত্বদানে সক্ষম ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধের জাগরণ ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।
তিনি বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমত সহিষ্ণুতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লালন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, অভিভাবক, ছাত্র সংগঠনসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে অবদান রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কেবল পাঠদান কেন্দ্র নয়, সেখানে মুক্তচিন্তা, সমকালীন ভাবনা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের নবতর অভিযাত্রাসহ সংস্কৃতি চর্চা, সৃজনশীল কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের জানার পরিধিকে যেমন বিস্তৃত করে তেমনি তাদের পরিণত করে বিশ্ব নাগরিক, উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।
প্রযুক্তি উন্নয়নের বাহন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, উন্নয়নের অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে হলে আমাদের নতুন নতুন উদ্ভাবনে উদ্যোগী হতে হবে। তবে উদ্ভাবনকে যথাযথভাবে প্রয়োগই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হবে। কিন্তু প্রযুক্তি যাতে মানুষকে ব্যবহার না করতে পারে, সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। এক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে।
নবীন গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আগের মতো ফ্রিস্টাইলে চললে চলবে না। তোমাদের উপর এখন অনেক দায়িত্ব। তোমাদের জ্ঞান আর মেধা হবে দেশের চালিকাশক্তি। দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তোমাদের উপর। দেশ ও জনগণের কাছে তোমাদের আছে ঋণ। একজন বিবেকবান নাগরিক হিসেবে সেই ঋণ তোমাদের পরিশোধ করা উচিত। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ থেকে সর্বোচ্চ ডিগ্রি অর্জনকারী একজন গ্র্যাজুয়েট হিসেবে সবসময় সত্য ও ন্যায়কে সমুন্নত রাখবে। দুর্নীতি ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে।
শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।
Account Benefitরাষ্ট্রের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে তোমাদের কাছে প্রত্যাশা করি, তোমরা কখনও ডিগ্রির মর্যাদা, ব্যক্তিগত সম্মানবোধ আর নৈতিকতাকে ভুলুণ্ঠিত করবে না। আর একটা কথা বলি, কর্ম উপলক্ষে তোমরা পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকো না কেন, এ দেশ ও এ দেশের জনগণের কথা ভুলবে না। ভুলবে না খেটে খাওয়া সাধারণ জনগণের কথা। মনে রাখতে হবে, বাঙালির শেকড় এই সাধারণ জনগণের মধ্যেই প্রোথিত। কর্মজীবনে তোমরা সফল হও, সার্থক হও এই কামনা করি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কেবল পাঠদান কেন্দ্র নয়, বরং তা জ্ঞান সৃষ্টি ও চর্চার এক অনন্য পাদপীঠ। মুক্তচিন্তা, সমকালীন ভাবনা, জ্ঞান-বিজ্ঞানের নবতর অভিযাত্রাসহ সংস্কৃতি চর্চা, সৃজনশীল কর্মকান্ড শিক্ষার্থীদের জানার পরিধিকে যেমন বিস্তৃত করে তেমনি তাদেরকে পরিণত করে বিশ্ব নাগরিকে। লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল কর্মকান্ড শিক্ষার অন্যতম অনুসঙ্গ। এর অনুপস্থিতিতে আজ উগ্রবাদসহ নানামুখী অসহিষ্ণুতা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মুক্ত চিন্তার পরিবেশ বাধাগ্রস্থ করছে। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। আগামী প্রজন্মকে আধুনিক বাংলাদেশের নির্মাতা হিসেবে প্রস্তুত করতে এবং সকল স্তরে নেতৃত্বদানে সক্ষম ও দক্ষ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হলে তাদের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধের জাগরণ ঘটাতে হবে।
তিনি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, পরমত সহিষ্ণুতা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে লালন করার আহ্বান জানান। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, গবেষক, অভিভাবক, ছাত্রসংগঠনসহ সকলকে সম্মিলিতভাবে অবদান রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে আগমণ করায় অধ্যাপক ড. রবার্ট হিউবারকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান রাষ্ট্রপতি।
সমাবর্তনে অধ্যাপক ড. রবার্ট হিউবার তাঁর নিজের ক্ষেত্র প্রাণ-রসায়ন নিয়ে বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন। বাংলাদেশের বিরাট প্রাকৃতিক সম্পদ ও জনশক্তি বিষয়েও কথা বলেন তিনি। গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনারা এক নতুন জীবনে পদার্পণ করলেন, যেখানে পিতামাতা, সমাজ, দেশ এবং মানবতার প্রতি রয়েছে গুরু দায়িত্ব। একজন মানুষ হিসেবে এই দায়িত্ব পালনে আপনাদের সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
রবার্ট হিউবার বলেন, ‘খাদ্য, শক্তি এবং পরিবেশ বিপর্যয় এখন মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের। কিন্তু এরও সমাধান রয়েছে তোমাদের মতো যুব সমাজের মাথায়। তোমরাই যেকোনো দেশের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ।
সমাবর্তনে ৫৭০ জন গ্রাজুয়েট অংশগ্রহণ করেন। এরমধ্যে, পরীক্ষায় অসাধারণ কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখার জন্য সমাবর্তনে আটজন গ্র্যাজুয়েট চ্যান্সেলর স্বর্ণপদক পেয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রসায়ন শাস্ত্রে নোবেল জয়ী প্রফেসর ডক্টর লিবার্ট হিউবারকে ডি লিট উপাধি দেয়া হয়।
More detail about
Jashore University of Science and Technology
- মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
- এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট কোর্স- ইংলিশ, চাইনিজ, আরবি, ফ্রেঞ্চ
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-বিজ্ঞপ্তি
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর
- খুবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২২ ডিসেম্বর
- জবির সমাবর্তন ১১ জানুয়ারি
- জবিতে শূন্য আসনে ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু ২০ ডিসেম্বর
- রাবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
- অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ১৩ জানুয়ারি; মাস্টার্স রিলিজ স্লিপ আবেদন শুরু ১৯ ডিসেম্বর
- ডিজিটাল মেলা-২০২০ উপলক্ষে টেলিকমিউনিকেশন দফতরের রচনা প্রতিযোগিতা
- ঢাকা পলিটেকনিকে জানুয়ারি-জুন’২০ সেশনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি শুরু
- জেএসসি-পিইসির ফল বছরের শেষ দিন
- ৪০তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা ৪-৮ জানুয়ারি
- তিতুমীর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের নিবন্ধন শেষ আজ
Submit Your Comments: