উচ্চশিক্ষা যখন জাপানে
এশিয়ার দেশ জাপান। অর্থনীতি ও শিক্ষা- উভয় ক্ষেত্রেই এগিয়ে চলছে আধুনিক প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ দেশটি। কর্মমুখী শিক্ষা আর গবেষণামূলক কাজে পর্যাপ্ত সরকারি সহযোগিতা থাকায় উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পাড়ি জমায় জাপানে। জাপানে আগত শিক্ষার্থীদের দুই তৃতীয়াংশই আসে চীন থেকে। চীনারা আসে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও অর্থনীতি নিয়ে পড়াশোনার জন্য। এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যাও কম নয়। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ৮০০ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে।
পাঠ্যবিষয়:
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় ইকোনমিক সুপার পাওয়ার দেশ জাপান। এর মূলে রয়েছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে যুগোপযোগী উচ্চ শিক্ষার সুযোগ। প্রযুক্তি ছাড়াও পছন্দের যে কোনো বিষয়ে এখানে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। বাইরের দেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণত বিজ্ঞান, পরিবেশ, চিকিৎসা ও প্রযুক্তির বিষয়গুলো পড়ার জন্য পাড়ি জমায় জাপানে। বিভিন্ন দেশ থেকে আগত শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকা বিষয়গুলো হচ্ছে- কম্পিউটার সায়েন্স, আর্কিটেকচার, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োকেমেস্ট্রি, বায়োটেকনোলজি, ইনফরমেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ম্যানেজমেন্ট, পলিটিক্যাল সায়েন্স, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, মিডিয়া, ইকোনমি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও ডেন্টিস্ট্রি।
পড়াশোনার মাধ্যম:
জাপানের বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাপানি ভাষায় পাঠদান করা হয়। সেসব প্রতিষ্ঠানে পড়তে হলে জাপানি ভাষায় দক্ষতা থাকতে হবে। কিছু প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় পড়ানো হয়।
শিক্ষাবর্ষ:
জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সাধারণত বছরে দুটি সেশনে ভর্তির সুযোগ দিয়ে থাকে। গ্রীষ্মকালীন ও শীতকালীন সেমিস্টার। শুরু হয় যথাক্রমে প্রতি বছরের এপ্রিল ও অক্টোবরে। জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া তুলনামূলকভাবে কঠিন। তবে ভর্তি নিশ্চিত হলে ভিসা জটিলতা খুব বেশি থাকে না। তাই ভর্তির আবেদনের সময় নির্ভুল ও সঠিক তথ্য দিতে হবে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের আঞ্চলিক অফিস বাংলাদেশে আছে। সেসব প্রতিষ্ঠান ভর্তির ব্যাপারে সহযোগিতা করে থাকে। তাছাড়া শিক্ষার্থী নিজেও ইন্টারনেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিতে পারেন।
খন্ডকালীন কাজ:
জাপানে অবস্থানরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ২৮ ঘণ্টা খন্ডকালীনকাজ করার সুযোগ পেয়ে থাকে। যদিও এজন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
ভর্তির যোগ্যতা:
ব্যাচেলর ডিগ্রির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য:
ক. একাডেমিক: কমপক্ষে ১২ বছরের শিক্ষাগত যোগ্যতা (এইচএসসি বা সমমানের)।
খ. ভাষাগত যোগ্যতা: জাপানি ভাষার ওপর পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকতে হবে। কমপক্ষে ছয় মাসের জাপানি ভাষার কোর্স সম্পন্ন হতে হবে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান টোফেল সিবিটি স্কোর ১৫০-এর ওপর অথবা টোফেল আইবিটি স্কোর ৫২-এর ওপর চায়।
গ. অন্যান্য পরীক্ষা: আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জাপানি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য একটি পরীক্ষা দিতে হবে। জাপানি ভাষার দক্ষতার ওপর ওই পরীক্ষা দিতে হবে।
ঘ. কোর্সের সময়সীমা: অ্যাসোসিয়েট ডিগ্রি সম্পন্ন করার জন্য দু-তিন বছর সময় লাগবে। ব্যাচেলর ডিগ্রি সম্পন্ন করার জন্য বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে চার বছর সময় লাগে এবং মেডিকেল সায়েন্সের জন্য ছয় বছর সময় লাগবে।
মাস্টার ডিগ্রির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য:
ক. একাডেমি: কমপক্ষে ১৬ বছরের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে।
খ. ভাষাগত দক্ষতা : জাপানি ভাষার ওপর পর্যাপ্ত দক্ষতা থাকতে হবে। কমপক্ষে ছয় মাসের জাপানি ভাষার কোর্স সম্পন্ন হতে হবে।কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান টোফেল সিবিটি স্কোর ১৫০-এর ওপর অথবা টোফেল আইবিটি স্কোর ৫২-এর বেশি চায়।
শিক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর নিয়মিত পেতে রেজিস্ট্রেশন করুন অথবা Log In করুন।
Account Benefitগ. কোর্সের সময়সীমা: মাস্টার ডিগ্রি সম্পন্ন করতে দুই বছর সময় লাগবে।
ডক্টোরাল ডিগ্রি সম্পন্ন করতে তিন বছর সময় লাগবে এবং মেডিকেল সায়েন্স সম্পন্ন করতে চার-পাঁচ বছর লাগবে।
আবেদন প্রক্রিয়া:
আগ্রহী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হয়, এজন্য তাকে তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়টি বেছে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন প্রক্রিয়া এবং ভর্তির যোগ্যতা সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া যাবে। সময় মতো ক্লাস শুরু করতে হলে কোর্স শুরু হওয়ার অন্তত ২/৩ মাস আগে থেকে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।
জাপানি দূতাবাস বিভিন্ন সময় জাপানে উচ্চশিক্ষায় করণীয় শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করে থাকে। ভিসার জন্য বাংলাদেশের
শিক্ষার্থীদের ঢাকাস্থ জাপানি দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট শাখায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন করতে হয়।
আগ্রহী কেউ চাইলে এখানে বিভিন্ন মেয়াদী কোর্সে ভর্তি হতে পারেন। স্বল্প মেয়াদী কোর্সে ভর্তির জন্য টুরিস্ট ভিসা যথেষ্ট। তবে ভিসার মেয়াদ কোর্সের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত থাকতে হবে। দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের জন্য স্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে যেতে হবে।
ভাষা শিক্ষা:
জাপানি ভাষা শেখার জন্য ঢাকাস্থ জাপানি দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারেন। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষা ইন্সটিটিউটে বিভিন্ন মেয়াদের জাপানী ভাষা শিক্ষা কোর্স রয়েছে।
জাপানি সরকার প্রদত্ত স্কলারশিপ:
মেধাবী শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জাপান সরকার শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে থাকে। এ বিষয় জানার জন্য জাপানি দূতাবাসে যোগাযোগ করা যাবে। দূতাবাস বিভিন্ন সময় জাতীয় সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে স্কলারশিপের তথ্য প্রকাশ করে থাকে।
যেসব বিষয়ে পড়তে পারেন:
হিউম্যান স্টাডিজ, ভাষা শিক্ষা, ইতিহাস, মানববিদ্যা, এডুকেশনাল সায়েন্স, ল’ অ্যান্ড সোসাইটি, পাবলিক ল’ অ্যান্ড পলিসি, ট্রান্সন্যাশনাল ল’ অ্যান্ড পলিসি, অর্থনীতি, ব্যবস্থাপনা, হিসাববিজ্ঞান, গণিত, পদার্থবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, ভূ-প্রকৃতিবিদ্যা, রসায়ন, ভূ-বিজ্ঞান, মেকানিক্যাল সিস্টেমস অ্যান্ড ডিজাইন, ন্যানোমেকানিকস, এডুকেশনাল ইনফরমেটিকস, পরিবেশবিদ্যা, এনভায়রনমেন্টাল লাইফ সায়েন্স, ফলিত তথ্যবিজ্ঞান, আন্তঃসাংস্কৃতিক সম্পর্ক, এরিয়া স্টাডিজ, বায়োসায়েন্স ও বায়োটেকনোলজি, প্রাণিবিজ্ঞান, স্থাপত্য ও ভবনবিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োমলিকুলার ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়াল সায়েন্স, হিউম্যান-সোশ্যাল ইনফরমেশন সায়েন্স, বায়োলজি অ্যান্ড নিউরো সায়েন্স, কম্পিউটার অ্যান্ড ম্যাথমেটিক্যাল সায়েন্স ইত্যাদি।
টিউশন ফি:
টিউশন ফি বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপর নির্ভর করে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবছর প্রায় ১০ হাজার ডলার, লোকাল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবছর প্রায় ১১,৩৭৭ ডলার, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবছর প্রায় ৭,৯৫৯ থেকে ৬১,১২৩ ডলার খরচ পড়বে। যারা জাপানি সরকারের বৃত্তি পেয়ে পড়াশোনা করতে যান, তাদের টিউশন ফি দিতে হয় না।
পার্টটাইম জব:
পড়াশোনার পাশাপাশি আপনি খন্ডকালীন চাকরি করতে পারেন। খন্ডকালীন চাকরি হিসেবে ফাস্ট ফুড ক্যাটারিং, সেলস পারসন, ট্রান্সলেটর, কম্পিউটার ওয়ার্ক, স্কুলশিক্ষক, টিউটর, বডিগার্ড, উইন্ডো-ক্লিনার হিসেবে কাজ করতে পারেন।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা ও শিক্ষা সংক্রান্ত আরো তথ্য জানতে এখানে ক্লিক করুন
- মাস্টার্স শেষ পর্ব পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
- এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত
- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্টিফিকেট কোর্স- ইংলিশ, চাইনিজ, আরবি, ফ্রেঞ্চ
- বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-বিজ্ঞপ্তি
- বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর
- খুবির ৬ষ্ঠ সমাবর্তন ২২ ডিসেম্বর
- জবির সমাবর্তন ১১ জানুয়ারি
- জবিতে শূন্য আসনে ভর্তির সাক্ষাৎকার শুরু ২০ ডিসেম্বর
- রাবিতে আন্তর্জাতিক ছায়া জাতিসংঘ সম্মেলন শুরু বৃহস্পতিবার
- অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু ১৩ জানুয়ারি; মাস্টার্স রিলিজ স্লিপ আবেদন শুরু ১৯ ডিসেম্বর
- ডিজিটাল মেলা-২০২০ উপলক্ষে টেলিকমিউনিকেশন দফতরের রচনা প্রতিযোগিতা
- ঢাকা পলিটেকনিকে জানুয়ারি-জুন’২০ সেশনে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কোর্সে ভর্তি শুরু
- জেএসসি-পিইসির ফল বছরের শেষ দিন
- ৪০তম বিসিএস: লিখিত পরীক্ষা ৪-৮ জানুয়ারি
- তিতুমীর কলেজের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের নিবন্ধন শেষ আজ
Submit Your Comments: